শেরপুরের নকলায় এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা-২০২৪ এর প্রকাশিত ফলাফলের তথ্য মতে উপজেলায় গড় পাশের হার ৮৩.০৬%। নকলা উপজেলায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৬১৭ জন। মাধ্যমিক স্তরের ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ২ হাজার ৬৩০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে। এরমধ্যে ৬১৭ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে, বিজ্ঞান শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬১০ জন ও মানবিক শাখা থেকে পেয়েছে ৭ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২৩০ জন কৃতকার্য হয় ও অকৃতকার্য হয় ৪০০ জন। ফলে উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৮৪.৭৯%।
অন্যদিকে উপজেলার ২০টি মাদ্রাসা হতে ৫৬৪ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশনেয়। এরমধ্যে ২৫ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে, বিজ্ঞান শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ জন ও মানবিক শাখা থেকে পেয়েছে ৩ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪২৩ জন কৃতকার্য হয় এবং অকৃতকার্য হয় ১৪১ জন। ফলে দাখিল পরীক্ষায় পাশের হার দাঁড়ায় ৭৫%।
উপজেলায় ৩০টি বিদ্যালয় ও ২০টি মাদ্রাসাসহ মোট ৫০টি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শতভাগ কৃতকার্য হতে না পারলেও, নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের (১৮৮) সচিব মো. উমর ফারুক জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রনাধীন ১টি কেন্দ্র ও ১টি ভ্যানুতে ১৩টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এই কেন্দ্রের আওতায় বানিজ্য শাখা থেকে ২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জন কৃতকার্য হয়। মানবিক শাখা থেকে ৬১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৪০ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ৩ জন। আর বিজ্ঞান শাখা থেকে ৭৩৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭০৭ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ২৮৩ জন।
গৌড়দ্বার বি.এল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের (১৮৯) সচিব ইউসুফ আলী খান জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রনাধীন ১টি কেন্দ্র ও ১টি ভ্যানুতে ৫টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এই কেন্দ্রের আওতায় মানবিক শাখা থেকে ৩২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০৯ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ৩ জন। আর বিজ্ঞান শাখা থেকে ১৮৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭৯ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ৫৩ জন।
গনপদ্দী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের (১৯০) সচিব মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রনাধীন ১টি কেন্দ্র ও ১টি ভ্যানুতে ৬টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এই কেন্দ্রের আওতায় বানিজ্য শাখা থেকে ১ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে কৃতকার্য হয়। মানবিক শাখা থেকে ১৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫৫ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ১ জন। আর বিজ্ঞান শাখা থেকে ৩৭৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫২ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ২৭০ জন।
চন্দ্রকোনা রাজলহ্মী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের (৩৩২) সচিব রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রনাধীন ১টি কেন্দ্র ও ১টি ভ্যানুতে ৬টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এই কেন্দ্রের আওতায় বানিজ্য শাখা থেকে ১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে ১৩ জন কৃতকার্য হয়। মানবিক শাখা থেকে ৩২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৪৪ জন কৃতকার্য হয়। আর বিজ্ঞান শাখা থেকে ১৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৬ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ৪ জন।
এছাড়া দাখিল পরীক্ষার্থীর জন্য উপজেলার একমাত্র কেন্দ্রের (২৪৩) সচিব মাওলানা মো. আজিজুল ইসলাম জানান, তার নিয়ন্ত্রনাধীন নকলা শাহরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সাধারণ শাখা থেকে ৩৭৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০৬ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ৩ জন এবং বিজ্ঞান শাখা থেকে ১৯১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৭ জন কৃতকার্য হয়, জিপিএ-৫ পায় ২২ জন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ অব্দুর রশিদ কৃতকার্য সকল শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে জিপিএ-৫ বাড়লেও পাশের হার বিবেচনায় ফলাফলে তাঁরা সন্তুষ্ট নয়। আগামীতে পাশের হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন। আগামী পরীক্ষা থেকে উপজেলায় শতভাগ পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার বাড়বে বলে আশাব্যক্ত করেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীসহ সুশীলজন।