সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের মধ্য দিয়ে রোববার, ২৮ জানুয়ারি, ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নেমেছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে এই উৎসবের সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মোঃ শাহরিয়ার আলম।
উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। ইরানের প্রখ্যাত নির্মাতা মাজিদ মাজিদি, ভারতীয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরসহ নানা দেশ থেকে আসা জুরি এবং অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন এবং অন্যান্য।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্র বিকাশে সহায়তা করছে। একইসঙ্গে সকল ধরনের গোঁড়ামি, মৌলবাদী তৎপরতা ও উগ্রপন্থী কার্যকলাপ প্রতিরোধে অবদান রাখছে। এই উৎসব সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম।
সভাপতির বক্তব্যে উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি দীর্ঘকাল ধরে এই উৎসব আয়োজন করে যাচ্ছে। আরও একবার সফলতার সঙ্গে তারা এই আয়োজন করল। এমন সফল আয়োজন দেখতে পেরে আমি সত্যি আনন্দিত। আমি এর অংশ হতে পেরে গর্ব বোধ করছি।
তিনি জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীতে এই উৎসব আয়োজনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীতশিল্পী ও কম্পোজার লাবিক কামাল গৌরবের ব্যান্ডদল ‘এলকেজি কোয়ার্ট্রেট’। গিটারে ছিলেন অনিক আহনাফ খান, বেজ/ ভোকালে আদনান রুশদি।
আজ উৎসবে মোট আটটি বিভাগে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের উৎসবে সেরা শিশু চলচ্চিত্র বাদল রহমান পুরস্কার পেয়েছে ভারতের বিপুল শর্মা পরিচালিত ‘প্রভাস’ সিনেমাটি। এ ছাড়া দর্শকদের ভোটে সেরা সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন শ্যাম বেনেগাল।
পুরস্কারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা–
স্পেশাল অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড: বিজয়ার পরে (ভারত)। পরিচালক: অভিজিত দাস।
স্পিরিচুয়াল ফিল্ম বিভাগ
বেস্ট ফিচার ফিল্ম: দেয়ার অ্যান্ড ব্যাক (রাশিয়া), পরিচালক: ওলেগ আসাদুলিন।
বেস্ট ডকুমেন্টারি: কুনানফিন্ডা: দ্য ল্যান্ড অব ডেথ (কিউবা), পরিচালক: হ্যানসেল লেভা ফ্যানিগো।
স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড: সুরত (বাংলাদেশ, পরিচালক: গোলাম রব্বানী।
নারী নির্মাতা বিভাগ
বেস্ট ফিচার ফিল্ম: জুনকস অ্যান্ড ডলস (ইরান), পরিচালক: মানিজেহ হিকমত।
বেস্ট ডকুমেন্টারি: পাসাঙ্গ: ইন দ্য শ্যাডো অব এভারেস্ট (যুক্তরাষ্ট্র), পরিচালক: ন্যান্সি স্ভেন্ডসেন।
সেরা পরিচালক: গাইওংমু এনওএইচ (দক্ষিণ কোরিয়া), সিনেমা: হাউ টু গেট ইউর মেন প্রেগনেন্ট।
স্পেশাল মেনশন: মুক্তি (বাংলাদেশ), চৈতালি সমাদ্দার।
বাংলাদেশ প্যানোরামা: পূর্ণদৈর্ঘ্য বিভাগ
ফিপরেসি অ্যাওয়ার্ড (পূর্ণদৈর্ঘ্য ফিচার ফিল্ম): সাবিত্রী, পরিচালক: প্রান্ত প্রসাদ।
বাংলাদেশ প্যানোরামা: ট্যালেন্ট বিভাগ
ফিপরেসি অ্যাওয়ার্ড (শর্ট ফিল্ম): লায়লা, পরিচালক: বৈশাখী সমাদ্দার।
প্রথম রানার-আপ: ইনাফি, পরিচালক: শুভাশিষ সিনহা।
দ্বিতীয় রানার-আপ: অন্তহীন পথে, পরিচালক: জিয়াউল হক রাজু।
এশিয়ান ফিল্ম বিভাগ
সেরা স্ক্রিপ্ট: ডোভ (তাজিকিস্তান), পরিচালক: মুহিদ্দিন মুজাফফর।
সেরা সিনেমাটোগ্রাফি: মাইটি আফরিন- ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস (বাংলাদেশ, ফ্রান্স ও গ্রিস), পরিচালক: অ্যাঞ্জেলোস র্যালিস।
সেরা অভিনেত্রী: বাডিমা (চীন), সিনেমা: দ্য কর্ড অ লাইফ।
সেরা অভিনেতা: অঞ্জন দত্ত (ভারত), সিনেমা: চালচিত্র এখন।
সেরা পরিচালক: জগত মানুওয়ারানা (শ্রীলঙ্কা), সিনেমা: হুইসপারিং মাউন্টেনস।
সেরা ফিল্ম: দ্য কর্ড অব লাইফ (চীন), পরিচালক: কিয়াও সিজু।
সেরা অভিনেত্রী (জুরি): আফরিন খানম, সিনেমা: মাইটি আফরিন- ইন দ্য টাইম অব ফ্লাডস।