ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার ভূমি অফিসের এসিলেন্ড ও নাজিরের বিরুদ্ধে নামজারির মিস কেস মামলার নথি গায়েবের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রসরাজ সরকার। এ বিষয়ে গত ১০ জুলাই ২০২৪ তারিখে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন তিনি।
ভুক্তভোগী রসরাজ সরকার, পিতা- মৃত লালমোহন সরকার, গ্রাম – দাউরিয়া পোস্ট – দক্ষিণ পাড়া, উপজেলা – সরাইল, জেলা – ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিযোগে বলেন, সরাইল উপজেলা ভূমি অফিসে বর্তমানে কর্মরত এসিল্যান্ড নাছরিন সুলতানা ও নাজির সুব্রত সাহার যোগসাজশে নামজারির মিস কেস মামলার নথি গায়েব করেছে।
সরাইল উপজেলার শাহজাদপুর মৌজার ১৭৫৬ নং খতিয়ানের মালিক ছিল মৃত ভুবন জয় ভৌমিক। ভূবন জয় ভৌমিক এ আইন গত ওয়ারিশ আছে তার মা রাশমনি ভৌমিক। রাশমনি ভৌমিক এর এক মাত্র ছেলে ভুবনজয় ভৌমিক অকালে মৃত্যুবরণ করলে তার মায়ের আয়ের কোন উৎস নেই। তাই রাশমনি ভৌমিক তার চলার জন্য তার বড় মেয়ে রিতন রানী সরকার এর কাছে সরকারি আইন মেনে কিছু জায়গা বিক্রি করে। কিন্তু ভুবন জয় ভৌমিক এর সৎ ভাইয়ের ছেলে স্বপ্ন লাল ভৌমিক ,রাশমনি ভৌমিক এর কাছে বিক্রি করলে ক্রেতা নিজ নামে জমা খারিজ করে সরকারি খাজনাদি পরিশোধ করে আসা অবস্থায়, স্বপ্ন লাল ভৌমিক জাল জালিয়াতি করে তার নিজ নামে জমা খারিজ করে নেয় অবৈধ ভাবে।
পরবর্তীতে স্বপ্ন লাল ভৌমিকের নামে বর্তমানে খারিজ বহাল থাকলেও অবৈধভাবে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আবার সে নিজেই আপিল করে তার নামে একক ভাবে রায় নেয়। যার জমা খারিজ মামলা নং – ২০৫৫/১৩-১৪,২০০৬/১৩-১৪, বিবিধ মোকদ্দমা নং – ৯০/১৩-১৪ ।আমি বিবাদী পক্ষ কোন নোটিশ পাইনি, পরবর্তীতে আমি এই অবৈধ খারিজ এর বিরুদ্ধে মিস কেস মামলা দায়ের করার জন্য, সরাইল এসিলেন্ড অফিসে যোগাযোগ করলে , কোন সহযোগিতা না পেয়ে জেলা অফিসে যোগাযোগ করলে, উনারা পরামর্শ দেয় এই খারিজের মিস কেস মামলার নথির সই মোহরি নকল লাগবে, তখন আমি জেলা রেকর্ড রোমে আবেদন করি। আবেদন এর পর সরাইল ভূমি অফিসের নাজির সুব্রত সাহার সাথে দেখা করে আবেদনের রিসিট দেখালে সে বলে আবেদন এখন ও আসেনি। আবার কিছু দিন পর দেখা করলে তখন ও বলে আসেনি। তখন আমি জেলা রেকর্ড রোমে দেখা করি উনারা বলে,যে আমরা অনেক দিন আগেই পাঠিয়ে দিছি আবেদন। আবার সুব্রত সাহার সাথে দেখা করলে তখন ও বলে আসেনি আবেদন। তখন আমি ডাক অফিসে যোগাযোগ করলে উনারা বলে আজ থেকে আঠারো দিন আগেই দিয়েছি ডাক। আবার নাজির সুব্রত সাহার সাথে দেখা করলে বলে এই আবেদন দেখার সময় নেই আমার কাছে। তখন এসিল্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করি, উনি বলছে ঠিক আছে আমি দেখছি বিষয়টি। এর কিছু দিন পর আমি আবার সুব্রত সাহার সাথে দেখা করলে বলে হে আবেদন আসছে। আমরা পাঠিয়ে দিবো, আপনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেকর্ড রোমে যোগাযোগ করেন কিছু দিন পর। আমি জেলা রেকর্ড রোমে দেখা করলে বলে নথি এখনো আসেনি।আবার সুব্রত সাহার সাথে দেখা করলে বলে নথি পাঠিয়ে দিছি। রেকর্ড রোমে বলে নথি আসেনি এখনো। এসিল্যান্ড নাছরিন সুলতানার সাথে যোগাযোগ করলে উনি বলে নথি দেখছে এখন ও পাইনি। আবার কিছু দিন পর দেখা করলে এসিল্যান্ড বলে এই নথি নেই আমার অফিসে। অফিসে খুঁজে পাচ্ছে না। এর পরে আমি এডিসির কাছে গিয়ে আমার আবেদন এর রিসিট নিয়ে দেখা করি,এডিসি বলেন, ঠিক আছে দেখতেছি। কিছু দিন পর আবার এডিসির সাথে দেখা করলে উনি বলে এখন ও নথি পাঠাইনি।তখন উনি রেকর্ড রোমের স্যারকে বলে ,যে সরাইল এসিল্যান্ড কে বলেন দ্রুত এই নথি পাঠিয়ে দিতে। তখন রেকর্ড রোমের স্যার ফোন করে বলে, এর নথি পাঠাই। এসিল্যান্ড নাছরিন সুলতানা ও নাজির সুব্রত সাহা বলছে নথি নেই। এই অফিসের এক জন অফিসার বলছে আপনার নথি নেই, গায়েব করা হয়েছে। এর রেকর্ড রোমে দেখা করলে উনারা বলে এই নথিতো আসল না, ছায়া নথি। এর আগে আমার এক জন পরিচিত অফিসারের মাধ্যমে এই নথির কপি আমি সংগ্রহ করি। এই নকল কপিতে কোন স্বারক নাম্বার নেই। তখন এসিল্যান্ডের সাথে দেখা করলে উনি বলে আপনার কাছে কোন কপি আছে। তখন আমার সাথে এক জন সাংবাদিক ও ছিল, আমি নথির কপি দিলে উনি বলে এটাতে কোন স্বারক নাম্বার নেই। এই সময় নাজির ও উপস্থিত ছিলেন, এসিল্যান্ড বলে এটা আসল না নকল আমি বুঝবো কি করে। এটা আপনি কোথায় পেয়েছেন? কে দিয়েছে? তখন নাজির বলে স্যার আমি দিয়েছি অন্য! অফিসের এক বড় ভাই বলছে দিতে। এসিল্যান্ড বলে আপনি কোথায় পেয়েছেন এই নথি? নাজির বলে আমাকে এডভোকেট রাখেশ দিয়েছে আন অফিসিয়ালি? তখন এসল্যান্ড নাজিরকে অফিসের রেজিষ্ট্রার খাতায় এন্টি আছে? নাজির বলে না।তখন এসিল্যান্ড নাজির এর উপর রাগান্বিত হন। তখন এসিল্যান্ড নাজির কে বলে এই নথি এডভোকেট রাখেশ কোথায় পেয়েছেন? উনাকে আর শাহজাদাপুর ও শাহবাজপুর এর নায়েব কে ঢাকতে।এর কয়েক দিন পর আমি অফিসের নাজির এর সাথে দেখা করি। উনি বলে এসিলেন্ড স্যার বলছে উভয় পক্ষকে নোটিশ দিতে। নোটিশ রেডি আছে স্যার অফিসে আসলে নোটিশ জারি করবো। এর কয়েক দিন পর আবার নাজির এর সাথে দেখা করলে নাজির বলে এসিল্যান্ড স্যার নোটিশ দিতে না করছে। আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন। এর পর আমি কয়েক বার অফিসে গেছি এসিল্যান্ড আমার সাথে দেখা করেনি। আমি জানতে পারি এডঃরাখেশ দেখা করেছে এসিল্যান্ডও নাজির এর সাথে। এডঃ রাখেশ ও রাহুল গংরা একটা প্রতারক চক্র। এডঃ রাখেশ ও রাহুল গংরা আমাকে বলে সরাইল ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড ও নাজির কে টাকা দিয়ে কিনে নিছি তুই কিছুই করতে পারবে না। এডঃ রাখেশ ভারতের র এর এজেন্ট। এসিল্যান্ড ও নাজির টাকা ছাড়া কোন কাজ করে না সরাইল উপজেলা ভূমি অফিসে। উনারা অবৈধভাবে অল্প সময়ের মধ্যে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ভুক্তভোগী রসরাজ সরকার এসিল্যান্ড ও নাজির সহ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও সু বিচার চেয়েছেন।
(চলবে)