ভিন্ন ধরনের চরিত্রে রূপদান করায় অভিনয়ে পরিবর্তনশীলতা আসে। স্বভাব-সুলভ জীবন-যাপনের বাহিরে যখন গল্প নির্মিত হয় তখনই দর্শক আনন্দ পায়। তেমনি ব্যতিক্রমী ধাঁচের গল্প নিয়ে অর্পনা রানী রাজবংশীর রচনা এবং নাজনীন হাসান খানের পরিচালনায় নির্মিত হলো ‘মি. পারফিউম’ নামক একক নাটক। এ নাটকে অভিনয় করেছেন- আখম হাসান, রেজমিন সেতু, শফিক খান দিলু, রেশমা আহমেদ, ফরিদ হোসাইন, ইশরাত জাহান প্রমুখ।
গল্প প্রসঙ্গে পরিচালক নাজনীন হাসান খান বলেন, ‘খুবই ভিন্ন ধাঁচের একটি গল্প। গতানুগতিক প্রেম-বিলাসীর বাহিরে পারিবারিক যোগসূত্রে নির্মিত নাটকটি। সামাজিক প্রেক্ষাপটগুলো এমন যে, গল্পে সে ধরনের বিষয়ভিত্তিক ও যৌক্তিকতার নিরিখে আবেদনগুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি মাত্র।’
অর্পনা রানী রাজবংশী বলেন, ‘অতীতের ন্যায় সব সময় আমি চেষ্টা করে করি গল্পে নতুনত্ব আনার। এবারের প্রচেষ্টাও তেমনি অংশ। দর্শকের ভালো লাগাই আসলে আমার ভালো লাগা। একজন লেখকের নিজস্ব স্বকীয়তার পরিচয় তো তখনই ফুটে উঠে, যখন দর্শকের মননশীলতায় হৃদয়াঙ্গম করা যায়।’
গল্পে দেখা যায়- জামাল পানিকে প্রচণ্ড ভয় পায়। সেই জন্য সে গোসল করতে ভয় পায়। নিয়মিত গোসল না করার কারণে তার শরীর দিয়ে বিদঘুটে গন্ধ বের হয়। সেই জন্য কোনো মানুষ তার সাথে চলাফেরা করে না। কোথাও গেলে তার পাশে থাকা মানুষ সরে যায়। এই সব বিষয়ের দিকে কর্ণপাত করার বিন্দুমাত্র সময় তার নেই। গোসল করা নিয়ে স্ত্রীর সাথে প্রতিনিয়ত ঝগড়া হয়।
জামালকে দেখলে গ্রামের মানুষ একপ্রকার দৌড়ে পালায়। জামাল চায়ের দোকানে গিয়ে বসলে দোকানদার তাকে চলে যেতে বলে। কারণ দীর্ঘ সময় সে দোকানে বসে থাকলে কোনো কাস্টমার আসবে না। এই নিয়ে দোকানদারের সাথে তুলকালাম কাণ্ড বেধে যায়। জামাল তো পারে না, সে দোকানদারকে মারতে যায়।
একদিন জামালের স্ত্রী রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে সে শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়। জামালের স্ত্রী রিপা জামালের বাড়ি ফিরে যেতে বলে সে তার সাথে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জামাল কি করবে সে বুঝতে পারে না। মেয়েকে মাথা ঠাণ্ডা করার কথা বলে রিপার মা।
কিন্তু ঘটনা সামনে কি ঘটতে যাচ্ছে সেটা জামাল বুঝতে পারে না। তার ভায়রা ভাই তাকে সুকৌশলে একদিন নদীর পাড়ে নিয়ে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জামাল, এই রকম পরিস্থিতি দেখে হতভম্ম হয়ে যায় উপস্থিত সবাই। সবাই মিলে জোরপূর্বক যখন জামালকে গোসল করিয়ে দেয় তখন সে বুঝতে পারে আসলে পানিতে গোসল করার কি মজা। তার এতদিনের শরীরকে বাতাসের মতো হালকা অনুভূত হয়। এভাবে এগিয়ে যায় গল্পের প্রতিটি চরিত্র।