রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন

কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা চিকিৎসা শিক্ষায় বিপ্লব এনেছে, আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বক্তারা

শওকত আলী হাজারী  / ৫২ বার
আপডেট সময় :: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন

 

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন উদ্ভাবনী যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে আর তা দিয়ে চিকিৎসকরা খুব সহজেই রোগির রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা দিতে সক্ষম হচ্ছেন।

এছাড়াও চিকিৎসা শিক্ষায় কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাকে একীভূত করার মাধ্যমে চিকিৎসকরা রিয়েল-টাইম ডাটা বিশ্লেষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন।

সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খি: বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) উদ্যোগে ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা জানান।

তারা জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্যসেবা শিল্পে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। চিকিৎসকদের রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং পরিচালনার পদ্ধতিকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে।

বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এআই-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানগুলির মধ্যে একটি হল মেশিন লার্নিং চিকিৎসা রেকর্ড, ডায়াগনস্টিক ইমেজ এবং জেনেটিক তথ্যসহ রোগীর বিপুল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে। এছাড়াও এটি ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো জটিল রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম।

বিপিএমসিএ’র প্রেসিডেন্ট এম এ মুবিন খানের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন- এর সভাপতি প্রফেসর রিকার্ডো লিওন বোর্কেজ, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ংসিক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব অনস্বীকার্য। এটি ডায়াগনস্টিকস ও চিকিৎসায় নতুন আকার দিচ্ছে। প্রযুক্তির অগ্রগতি অব্যাহত থাকায় এর সম্ভাবনাকে গ্রহণ করতে হবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম একটি হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটি বিশ্বের সামগ্রিক গতিপ্রকৃতি ও মানুষের চিন্তাভাবনায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করলেও বর্তমানে অন্যান্য খাতেও এর বহুল ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। বেসরকারি খাতে এর ব্যাপক ব্যবহারের পাশাপাশি সরকারি খাতেও অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।

সেমিনারের সমাপনী দিনের প্রথমার্ধে চিকিৎসা ‘শিক্ষা এবং স্বীকৃতিতে শ্রেষ্ঠত্ব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ডব্লিউএফএমই’র সভাপতি প্রফেসর রিকার্ডো লিওন বোর্কেজ।

এছাড়াও প্রফেসর ড. ইফফাত আরা, বারডেমের ডিজি অধ্যাপক এম.কে.আই. কাইয়ুম চৌধুরী ও প্রফেসর ডা. সারিয়া তাসনিম বক্তব্য রাখেন।

দ্বিতীয় সেশনে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং চিকিৎসা শিক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ফ্লোরিডার ভিজিটিং প্রফেসর, প্রফেসর ড. নাসির মোহাম্মদ উদ্দিন এবং লাইভ ডেমো উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. নাসির মোহাম্মদ উদ্দিন ও ড. মোহাম্মদ মনির উদ্দিন।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, প্রফেসর ড. রাজেশ পালিত, সোসাইটি অফ সার্জনস সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফিরোজ কাদের, এএমই বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মানজার ই. শামীম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. কাজী খায়রুল আলম।

বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের প্রথমাংশে ‘থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শিক্ষা নীতির আটষট্টি (৬৮) বছরের যাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের চিকিৎসা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক সোমচাই ইয়ংসিরি। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ায় চিকিৎসকদের জন্য সিপিডি প্রতিষ্ঠায় প্রযুক্তির ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে শ্রীলঙ্কা কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল শিক্ষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ইন্দিকা মহেশ করুণাথিলাকে বক্তব্য রাখেন।

দ্বিতীয় বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে ‘চিকিৎসকদের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের রূপান্তর এবং স্কেলিং আপ’ ও ‘স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য পেশা শিক্ষা এবং গবেষণায় এআই: সুযোগ, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক তিতি সাবিত্রী ও অধ্যাপক ড. অবিনাশ সুপে।

বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের সমাপনী অংশে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের সাঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিজিএমই ডিজি নাজমুল হোসেন, ডিজিএমই পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর।

সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, দুইদিন ব্যাপী এই কনফারেন্সে ৭টি দেশ থেকে চিকিৎসা শিক্ষা খাতের প্রথিতযশা প্রায় ৪৫০ চিকিৎসক ও ব্যক্তিত্ব অংশ নেন।

উদ্ভোবনী অনুষ্ঠানে চিকিৎসা শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বমানের অ্যাক্রেডিটেশন নিশ্চিতের দাবি জানান চিকিৎসা শিল্পের উদ্যোক্তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!