পিরোজপুর-২ আসনের জনপ্রিয় এমপি মহোদয় জনাব মহিউদ্দিন মহারাজের উপস্থিতিতে নেছারাবাদ উপজেলায় অত্যান্ত সুশৃঙ্খল ও অনাড়ম্বর পরিবেশে পালিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর গৌরবময় ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।
এ উপলক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা কার্যালয়ে গত ২৩ জুন রবিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে পিরোজপুর-২ আসনের জনপ্রিয় সাংসদ জনাব মহিউদ্দিন মহারাজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজনের শুভ সুচনা করেন।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন – বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন নেছারাবাদ উপজেলা শাখার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ ও নেতাকর্মী বৃন্দ। এরপর সকাল সারে দশটায় একটি সুসজ্জিত র্যালি স্বরুপকাঠি পৌর এলাকার কিছু অংশ প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে বেলা ১১ টার সময় মাননীয় সংসদ সদস্য মহোদয়ের স্বরুপকাঠির বাসভবন চত্বরে / তার নিজ বাড়ির সামনের মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভার প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার সকল নেতা ও বীর সৈনিক সহ সকল ভাষা শহীদের প্রতি সকলে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
উক্ত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন – মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজ (সংসদ সদস্য – পিরোজপুর -২)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন – অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম (সাবেক সংসদ সদস্য – পিরোজপুর -১)।
সভার সভাপতিত্ব করেন – সৈয়দ সহিদ-উল আহসান (সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নেছারাবাদ উপজেলা শাখা)।
সভার সঞ্চালনায় ছিলেন – এস,এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নেছারাবাদ উপজেলা শাখা)।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন – আলহাজ্ব আব্দুল হক (সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ)। মোঃ গোলাম কবির (স্বরুপকাঠি পৌর মেয়র)। মোঃ আব্দুল হামিদ (সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নেছারাবাদ উপজেলা শাখা)।
জনাব মোঃ শফিকুর রহমান সুমন (ভাইস চেয়ারম্যান, নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ)।
তুলি মন্ডল (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ) এবং নেছারাবাদের সকল ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানবৃন্দ,আওয়ামীলীগ,যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ আওয়ামীলীগের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠালগ্নের বীর সৈনিক মাওলানা ভাসানী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শের এ বাংলা একে ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সকল ভাষা শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন- এই সকল ঐতিহাসিক নেতাদের হাত ধরেই আমরা আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পেয়েছি, একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি।স্বাধীনতা যুদ্ধেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভূমিকা অপরিসীম। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেড়েছি এবং একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিনত হতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা ২০৪১ সালের মধ্যে এদেশ একটি উন্নত আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা। দেশনেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে অবশ্যই আমরা সফলকাম হতে পারবো। দেশের উন্নয়নে সবকিছুর মূলে দেশনেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অবদান অনস্বীকার্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি নেছারাবাদ উপজেলার উন্নয়নের বিষয়ে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন।
তিনি বলেন- এই এলাকার সব ধরনের উন্নয়নে তিনি সরকারি ও ব্যাক্তিগতভাবে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবেন এবং তিনি দৃঢ় কন্ঠে ঘোষণা করেন- স্বরুপকাঠিতে এই সভাস্থল চত্বরে তিনি একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করবেন খুব অচিরেই। যেটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেছারাবাদ শাখার কেন্দ্রীয় অফিস হবে।
এছাড়া প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ১টি করে আওয়ামী লীগ অফিস হবে যেগুলো তার নিজের অর্থায়নে চলবে।
স্বন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ের উন্নয়নে প্রথমেই ইন্দ্রেরহাট- মিয়ারহাটের সংযোগস্থলের সেতু/ব্রিজটি পুননির্মাণের জন্য সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জুলাই-আগষ্টে এর কাজ শুরু হবে বলে জানান। নৌ ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা অতি দ্রুততার সাথে নেওয়া হচ্ছে এবং নদী ভাঙ্গনের বেরী বাঁধের জন্য আপাতত ৫০ কোটি টাকার বাজেট সম্পন্ন হয়েছে। সেটার কাজও খুব শিঘ্রই চালু হবে।পরবর্তীতে নদীর দুপাড়েই বানারীপাড়া পর্যন্ত বেরীবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। স্বরুপকাঠি সরকারি হাসপাতাল পর্যবেক্ষণের পর তিনি যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহনেরও আশ্বাস দেন। এছাড়া পুরো নেছারাবাদ উপজেলার জন্য বর্তমানে ১৬৪ টি ব্রিজ কালভার্ট সহ ১৫০ টি রাস্তার কাজ অতি দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে।
উল্লেখ্য গত জুনে শুধু নেছারাবাদ উপজেলার জন্য ৫০০ কোটি টাকার বাজেট নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে মানুষের দুঃখ দুর্দশায় এই এলাকার উন্নয়ন কিছুটা স্বাদিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
পরিশেষে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং দেশবাসী সহ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে তিনি তার মূল্যবান বক্তব্য শেষ করেন।
সভার শেষ পর্যায়ে বিশাল এক কেক কেঁটে এবং দোয়া ও মোনাজাত শেষে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় এবং উপস্থিত সকলের জন্য বিশেষ আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হয়।