অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ৮০ টি দেশের দুই শতাধিক আলোচক ও আটশ’র অধিক অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতিতে ৩ দিন ব্যাপী এ সম্মেলন আগামী ১৬ থেকে ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪ সকালে সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তৃতীয়বারের মত অনুষ্ঠিতব্য সিজিএস’র বিশেষ এ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ভূ-রাজনীতি বিষয়ক এই সম্মেলনটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ট্র্যাক–২ ডিপ্লোম্যাসিকে সহজতর করার একটি প্ল্যাটফর্ম। বিওবিসির তৃতীয় সংস্করণের থিম নির্ধারন করা হয়েছে ‘ এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড’। এই সম্মেলন- ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয় এমন সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করবে। সম্মেলনে সিজিএস’র পার্টনার হিসেবে রয়েছে ইউএসএইড, ইউএন বাংলাদেশ, ইউএনডিপি, দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন বাংলাদেশ, কানাডিয়ান হাই কমিশন বাংলাদেশ, এম্বাসি অফ দি কিংডম অফ দি নেদারল্যান্ডস, ফ্রেডরিখ ইবার্ট স্টিফটাং, এয়ার এশিয়াসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান।
সংবাদ সম্মেলনে জিল্লুর রহমান বলেন, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ গত দুই বছর ধরে বার্ষিক বে অফ বেঙ্গল কনভারসেশনের আয়োজন করে আসছে। বিগত বছরগুলোতে এ সম্মেলনটি আয়োজন করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা বাধা দেয়া হয়েছিল, তবে এ বছর আমরা অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। এটি আমাদের তৃতীয় বছর এবং আমাদের সবচেয়ে বড় এ আয়োজনটি করতে যাচ্ছি। তিন দিনের সম্মেলনটি আনুষ্ঠানিকভাবে আগামীকাল ১৬ নভেম্বর শুরু হবে।
এই বছরের সম্মেলনে বিশ্বের ৮০ টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশগ্রহণকারী একত্রিত হবেন। সমসাময়িক বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের জন্য ঢাকায় যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এমন অনেক ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক হবে বলে জিল্লুর রহমান জানান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ তার ইতিহাসের এক অনন্য মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী আমাদের জন্য সংলাপ ও সহযোগিতার জন্য একটি নতুন পথ উন্মুক্ত করাসহ, গণতান্ত্রিক নীতি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করেছে। সিজিএস আয়োজিত এই সম্মেলন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, সীমান্ত পেরিয়ে সকল প্রতিধ্বনিত চ্যালেঞ্জগুলি অন্বেষণ করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এই তিন দিনের অর্থপূর্ণ এবং প্রভাবশালী আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
এটি শুধুমাত্র একটি সম্মেলন নয়, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার জন্য একটি আহ্বান মাত্র। সেই সাথে, নতুন সংলাপ এবং সমাধানকে উত্সাহিত করে জাতি এবং সম্প্রদায়গুলিকে বিভক্তকারী বিষয়গুলিকে মোকাবেলা করার লক্ষ্যে এই আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এ অঞ্চলের দেশগুলোর কুটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। বিশেষভাবে, এ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কুটনৈতিকভাবে লাভবান হবে। রাজনৈতিক, মানবাধিকার, অপতথ্য, গুজবসহ সকল বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই। সম্মেলনটি সার্থক করতে তিনি সবার সমর্থন ও সহযোগিতা আশা করেন।
সিজিএস এর চেয়ার মুনিরা খান বলেন, এই সম্মেলন থেকে আমরা গণতন্ত্র, শান্তি ও মানবাধিকারসহ বৈশ্বিক বিষয়ে জানতে চাই, কথা বলতে চাই। এই সম্মেলনের এজেন্ডা জনগণের জন্য, কোন রাজনৈতিক দলের নয়। সকল ধরনের সমস্যা ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে চাই। পৃথিবীব্যাপী জনগণ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, দারিদ্র্য নিয়ে কথা বলার জন্যই আমাদের এই সম্মেলন।
সম্মেলনের আলোচনার বিষয়বস্তু, সময়সূচী ও আলোচকদের তালিকা সমৃদ্ধ বুকলেট বিওবিসি’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://bayofbengalconversation.cgs-bd.com/ – এ পাওয়া যাবে, আগ্রহীরা সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।