শেরপুরের নকলা উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের বাউসা কবুতরমারী এলাকার সর্বজন ঘৃণিত মাদক ও দেহব্যবসায়ী খাদিজার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। খাদিজা আতঙ্কে অনেকে সম্মানহানির ভয়ে বাড়ী ছেড়ে একপ্রকার যাযাবর জীবন যাপন করছেন। এই সুযোগে দেহব্যবসায়ী খাদিজা তার অজ্ঞাত খদ্দেরদের সহযোগিতায় সম্মানী লোকদের বাড়িঘরে লুটপাট করার পাশাপাশি খাদ্যাভাবে মেরে ফেলছে গৃহপালিত পশুপাখি!
এমন এক ঘটনা ঘটেছে কবুতরমারী এলাকার সর্বজন সম্মানী লোক হানিফ উদ্দিনের সাথে। খাদিজার লজ্জাজনক কথাবার্তার ভয়ে হৃদরোগী হানিফ উদ্দিন কয়েকদিন ধরে বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র দিনাতিপাত করছেন। ফলে তার খামারের গরু খাবারের অভাবে মারা যাচ্ছে। এরইমধ্যে হানিফ উদ্দিনের খামারের একটি গরু খাদ্যের অভাবে মারা গেছে। বাকিগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে, যা সরেজমিনে দেখা গেছে।
জানা গেছে, এলাকাবাসীর অলিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৯ আগস্ট ছাত্র-জনতা মাদক কারবারি দেহব্যাবসায়ী খাদিজার বাড়িতে গিয়ে লিটন নামের এক খদ্দের ও খাদিজার সহযোগী মিনা নামে দেহব্যবসায়ী সর্দারনীকে হাতে নাতে আটক করে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করে। পরে তাদেরকে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। পরে তারা জামিনে বের হয়ে আসে।
বিষয়টি উপজেলা ছাড়িয়ে জেলার সব শ্রেণি-পেশার লোকজনের মুখেমুখে রটে গেলে খাদিজার মাদক ও দেহব্যবসার অবনতি দেখা দেয় এবং খাদিজার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় এলাকার ধনাঢ্য ও সম্মানী লোকদের ঘরে উঠে মানহানিকর কথাবার্তা বলে টাকা দাবী করতে থাকে।
এ বিষয়ে খাদিজা বলেন, হানিফ উদ্দিন এলাকার অনেক মেয়েকে দেহব্যবসায় বাধ্য করেছে। সে আমাকে তার ঘরে তুলে রেখে পালিয়ে গেছে। এখন এসে আমার একটা ব্যবস্থা করে দিলেই আর কোন কথা নাই।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে হানিফ উদ্দিন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছি। তিনি জানান, ১৯ আগস্ট ছাত্র-জনতা মাদক কারবারি দেহব্যবসায়ী খাদিজার বাড়িতে গিয়ে এক খদ্দের ও খাদিজার সহযোগী দেহব্যবসায়ী সর্দারনীকে হাতেনাতে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির হাতে সোপর্দ করে। পরে তাদেরকে পুলিশের মাধ্যমে আদালতে, অতঃপর বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর পাঠান। পরে তারা জামিনে বের হয়ে এসে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার পায়তারা শুরু করেছে। মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করতেছে। টাকা না দিলে আমাকে নারী কেলেঙ্কারীসহ মানহানিকর বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে জেল জরিমানা করানোর নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-জনতা, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্তবতীর্কালীন সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষ্যাপ কামনা করছেন তিনি।
স্থানীয় মোহাম্মদ আলী ও আনোয়ারা বেগমসহ এলাকাবাসীর বিভিন্ন বয়স ও নানান শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ জানান, তারা মাদক কারবারী ও দেহব্যবসায়ী খাদিজার অত্মাচারে অতিষ্ট। সম্মানী লোকজন সব সময় ইজ্জত হানীর ভয়ে থাকেন। এলাকার তরুণ সমাজ আজ বিপথগামী হয়ে পড়েছে। পড়ালেখা ছেড়ে তরুণ সমাজ আজ মাদকসহ নিষিদ্ধ নারীর দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তারা আরো জানান, হানিফ উদ্দিন বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে দিবালোকে তার ঘরের তালা ভেঙে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বৈদ্যুতিক মোটর নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে খাদিজা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদক কারবারি দেহব্যাবসায়ী খাদিজার কবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে ছাত্র-জনতা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ অন্তবতীর্কালীন সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন এলাকাবাসী।