রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শেরপুরে সুপার হিরো ডিএ তায়েব ফ্যান ক্লাবের উদ্যোগে ভিক্ষুকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেরপুরে আমির হোসেন নামের এক চোরা কারবারি গ্রেফতার পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেড’র আয়োজনে ইফতার মাহফিল: এক মিলনমেলা বেলকুচিতে ৩নং ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত নোয়াখালীর চৌমুহনীতে আগুনে পুড়লো ৬টি দোকান কবি তালাত মাহমুদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত নোয়াখালীতে বিধবার ঘরে ঢুকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে ডাকাতি বিশ্ব নদী কৃত্য দিবস উপলক্ষে নদী রক্ষার দাবিতে বাপা চকরিয়া শাখার মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় হা-পা বাধা অবস্থায় ভ্যান চালকের মরাদেহ উদ্ধার সাতক্ষীরায় বখাটের খপ্পড়ে পড়ে দশম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা

শিক্ষার্থীকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি ইবি শিক্ষকের

ইবি প্রতিনিধি / ৩৫ বার
আপডেট সময় :: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৪৯ অপরাহ্ন

বিভাগের নারী শিক্ষার্থীকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি, শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে ইন্টারনাল নম্বর টেম্পারিংসহ নানা অভিযোগ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের চাকরিচ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম হাফিজুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে সামনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেটের সামনে যেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটক আটকে প্রায় ঘণ্টাখানিক স্লোগান দিতে থাকে। এতে দুপুর দুইটার বাসে যাতায়ত করা প্রায় শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পরেন। এসময় উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ শর্তে প্রধান ফটক ছেড়ে দেয় তারা। পরবর্তীতে দুপুর ৩ টার দিকে প্রশাসন ভবনের তিনতলায় কনফারেন্স রুমে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো উপাচার্যের কাছে উত্থাপন করেন।

এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা দফা এক দাবী এক, হাফিজের পদত্যাগ; হাফিজের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; স্বৈরাচারের দোসর, হাফিজ হাফিজ; হাফিজকে হটাও, ডিএস বাঁচাও; হাফিজের ঠিকানা, ডিএস এ হবে না ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগে সহকারি অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করে ইন্টারনাল নম্বর টেম্পারিং করা, নারী শিক্ষার্থীদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করা, শিক্ষার্থীদের ফ্যানে ঝুলিয়ে মারার হুমকি, তাদের পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা, ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে বাধ্য করা, শিবির ট্যাগ দিয়ে হুমকি দেয়া, সিনিয়র জুনিয়রের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা, কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের যেতে বাধা দেয়া, বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের নেতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি ধামকি দেয়া সহ অসংখ্য অভিযোগ।

বিক্ষোভ মিছিলে ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী লামিয়া বলেন, স্যার ক্লাসে এসে কি বা কি বলে অপমান করবে সেই ভয়ে কাটাতে হয়েছে। আমি কি ড্রেস পড়লাম, কোথায় গেলাম, কার সাথে ঘুরলাম, কোন বাসে ঢাকা গেলাম সেসব কৈফিয়ত দিতে হয় আমাকে। আমাকে সবার সামনে বলছে যে আমাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটাবে। যে স্যারের গুণগান গায় সে ইন্টার্নাল মার্কে পায় ২৭, আমি পাই ১৭। আমি বৃষ্টিতে ভিজে চা খাইলে সে বলে আমি নাকি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছি৷ সে একজন শিক্ষক হয়ে সে সবার সামনে মেয়েদের গালি দেয়। আমি হাফিজের পদত্যাগ চাই, সে শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।

অপর শিক্ষার্থী অনন্যা রহমান বলেন, বাপ মা তুলে গালি দেওয়া স্যারের আগের অভ্যাস। যারা নাচ করি তাদের নর্তকী, বাকিদের বাজারের মেয়ে এগুলো বলেছে। আমাদের সামনে আমাদের ফ্রেন্ডদের বলেছে এসব কাস্টমমার ধরার ধান্দা৷ আমি আবার বন্ধুর সাথে কোথায় বসব না বসব, সেসব নিয়ে সে কুরুচিপূর্ণ কথা শুনিয়েছেন। সে আমাকে হেনস্তা করার জন্য ১০০ পেজের এসাইনমেন্ট করিয়েছে অথচ জমা নেয়নি। তার জঘন্য অপমানের ভাষা বলে শেষ হবে না।

মারুফ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বিভাগের এক সিনিয়র ভাই যিনি ছাত্রলীগের পোস্টেড ছিল। আমি যখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি তখন স্যার কর্তৃক হুমকি পায়। যদিও বিভাগের ভাই হিসেবে ওর ক্যারিয়ারে যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য আমাদের ব্যাচ থেকে তাঁকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখছিলাম। তাঁকে বলেছিলাম বিভাগে সবার সামনে এসে ক্ষমা চাইতে। কিন্তু সে তখনও সেই শিক্ষকের আশ্রয় নেয় এবং আমাদেরকে নানা ধরনের হুমকি দেয়।

এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ তুলেছে সেগুলো সত্য হলে অবশ্যই প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু যেকোন বিষয়ের একটা পদ্ধতি আছে। আমরা শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

এসময় বিভাগটির শিক্ষার্থীদের সকল দাবিদাওয়া শুনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, সকল অভিযোগই গুরুতর। এতোদিন তো কথা বলার কোনো সুযোগ ছিলোনা। কিন্তু আমরা এর পরিবর্তন আনছি। আমরা খুব শীঘ্রই শিক্ষকরা বসে এই বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করবো এতে শিক্ষার্থীরা তাদের সকল অভিযোগ জমা দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!