কল ড্রপ, মিউট কল, ইন্টারনেটে ধীরগতি, বিনা ঘোষণায় ডেটার মূল্য বৃদ্ধি, টাকা কেটে রাখা, হঠাৎ করে টাকা উধাও হয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ গেলেই নেটওয়ার্ক না থাকা, মোবাইল ব্যাংকিং এর উচ্চ সার্ভিস চার্জ সহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষুব্ধ মোবাইল সেবা গ্রাহকরা। অথচ গ্রাহকদের অভিযোগ শোনার মত কেউ যেন নেই। এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করতে গণশুনানির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্রাহকের মতামত ও গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বিইআরসির সাবেক সদস্য মুকুল ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা সংস্কারে বর্তমান সরকারের উচিত গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগ জানতে নিয়মিত গণশুনানির আয়োজন করা। সেটা হতে পারে ১৫ দিন এক মাস কিংবা দুই মাস। এছাড়া মানসম্পন্ন নিরবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের বলেন, টেলিযোগাযোগ সেবার ইকোসিস্টেমের প্রতিটি ধাপে ধাপে যে লুণ্ঠন হয় সেটি কমাতে পারলে এখনই ১০ থেকে ১২ শতাংশ মূল্য কমানো সম্ভব। প্রতিযোগিতার কথা বলা হলেও এ সেবায় প্রতিযোগিতা নেই। নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত দেড় মাসে ইন্টারনেট ডাটা ও ভয়েস কলের মূল্য হঠাৎ কেন বৃদ্ধি পেল এর ব্যাখ্যা কমিশনের কাছে চাই। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ম্যাসেজের চার্জ হঠাৎ ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি কেন পেল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জবাব চাই। দেশের শতভাগ গ্রাহকের দাবি আনলিমিটেড মেয়াদহীন ইন্টারনেট ডাটা তার প্রতি উপদেষ্টা বিটিআরসি এবং অপারেটর সম্মান প্রদর্শন না করলে আগামী দিনে ইন্টারনেট ডাটা বয়কটের মত কঠিন কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব। শ্রোতামূল্য নির্ধারণের জন্য কমিশনকে গণশুনানি অনুষ্ঠিত করতে হবে যেভাবে আমরা আজ উন্মুক্ত গণশুনানির ব্যবস্থা করেছি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, বিগত সরকারের সময় মন্ত্রণালয় যেভাবে ছিল এখনো তাই আছে। পরিবর্তনের কোন লক্ষণ আমরা দেখছি না।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক আমাদের দিন পত্রিকার সম্পাদক এডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) বলেন, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা সংস্কার এখন সময়ের দাবি। মানুষের এই অধিকার প্রায় সময় লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা রাখি।
জলধার রক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ ইবনে রানা বলেন, ইন্টারনেট আর পানির মধ্যে এখন খুব একটা পার্থক্য নাই। পানি ছাড়া যেমন জীবন চলে না ইন্টারনেট ছাড়াও তেমন আর জীবনে চলে না। তাই নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট প্রাপ্তির জন্য সকল উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।