বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে ‘কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে। শনিবার টি এ রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। আনুষ্ঠানিক কমিটি গঠন সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়।
কবির সাহিত্যকর্ম ও জীবন নিয়ে গবেষণা এবং তার স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার লক্ষ্যেই এ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি, গীতিকার মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাতকে সভাপতি ও কবি লিটন হোসাইন জিহাদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
কমিটির সহ সভাপতি হলেন প্রভাষক রাবেয়া জাহান তিন্নি, সাংবাদিক জাহাঙ্গির খান পলাশ, কবি ও গবেষক গাজী তানভীর আহমেদ সহ-সম্পাদক সালাউদ্দিন খান, কবি রাকিবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সায়মন মৃধা, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কবি রিয়াজ ইনসান, কোষাধ্যক্ষ কবি গোলাম মোস্তফা, প্রচার সম্পাদক: জাকির হোসাইন জিকু, সদস্য: কবি জমির হোসেন পারভেজ, সদস্য:ইমি আক্তার। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত বলেন, “কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অমূল্য রত্ন। তার অমূল্য সাহিত্য সৃষ্টি ও জীবনদর্শন নিয়ে গভীর গবেষণা এবং নবীন প্রজন্মের মধ্যে তা ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।” এ গবেষণা কেন্দ্রটি কবি আল মাহমুদের সাহিত্য ও জীবনী সংরক্ষণ, প্রকাশনা, সেমিনার করবে। সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রতি বছর সম্মাননা পদক প্রদান করা হবে। কবি আল মাহমুদের অমর সৃষ্টি সোনালী কবিন এর নামানুসারে এই পদকের নাম হবে “সোনালী কাবিন” যা একটি মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হবে এবং প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারী কবির জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদ সাহিত্য মেলা করা সহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তার স্মৃতি অম্লান রাখতে কাজ করবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত, তার কবিতায় গ্রামবাংলার প্রকৃতি, জীবনযাত্রা, এবং ঐতিহ্যের সজীব প্রতিচ্ছবি তিনি এঁকেছেন। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করা আল মাহমুদ বাংলা কবিতার আধুনিক যুগের অন্যতম প্রভাবশালী কবি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন,একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সাংবাদিক হিসাবে তার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করা এই মহান কবি তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে আজও বাংলা সাহিত্যের আকাশে দীপ্যমান। তার সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে, এবং বাংলা সাহিত্যে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন।