বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে বিগত ১০ বছরে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ৩৪ জনের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ দাবিতে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ১১ মে শনিবার সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন পালিত হয়। বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন মানববন্ধনের সংহতি প্রকাশ করেন।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও দৈনিক আমাদের দিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির), হাফিজুল করিম, মোঃ সুমন আহমেদ, সুলতান সালাউদ্দিন, ন্যাপ ভাসানীর স্বপন সাহা, ডাক্তার আমিনুল, নারী নেত্রী মিলি সহ অনেকে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরর্দী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘ পাহাড়ঘেষা সীমান্তবাসীরা। বন বিভাগের ও বিভিন্ন গণ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সাল থেকে এক দশকে শুধু গারো পাহাড়ে হাতির আক্রমণে ৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এ অঞ্চলের মানুষকে হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচাতে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
শাশ্বত মনির বলেন, ভারতের মেঘালয় সীমান্তঘেষা গারো পাহাড়ের পাদদেশে শেরপুর জেলার অবস্থান। ভারত থেকে আসা বুনো হাতির আক্রমণে প্রায়ই এ অঞ্চলের মানুষ মারা যাচ্ছেন। অথচ সরকারী ভাবে কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের অন্যতম আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল শেরপুর। আদিবাসীসহ এ অঞ্চলের মানুষগুলো আজ নিরুপায়। আমরা বন্য প্রাণী বা হাতির বিরোধী নই। আমরা চাই হাতির জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হোক। সেই সাথে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক। তাই বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের কাছে আমরা এর স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেডের জিএম (মার্কেটিং) এম রহমান রনি, শাহ আবুল বারাকাত সোহাগ, মাসুমা আক্তার সুমা, রুখসানা তাবাসসুম, মো. নেজাব উদ্দিন সাজু, ফেরদৌস, জেসমিন আক্তার দিপা, শাহাদাত হোসেন শাকিলসহ আরও অনেকেই।
মানববন্ধনে যেসব দাবি উত্থাপন করা হয় সেগুলো হলো-
১) নিহত প্রত্যেক পরিবারকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সহযোগিতা ও পুনর্বাসন করতে হবে।
২) হাতিদের খাওয়া-দাওয়া ও চলাফেরা স্বাভাবিক রাখতে নির্দিষ্ট হাতি অভয়ারণ্য কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। প্রয়োজনে ভারত বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে।
৩) ফসল ক্ষয়ক্ষতির শিকার কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা ও পুনর্বাসন করতে হবে।
৪) শেরপুর জেলাকে পর্যটন জেলা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
(৫) মানুষ ও হাতির মৃত্যু রোধ নিশ্চিত করতে হবে।
(৬) বনে আগুন জ্বালিয়ে বনভূমি ধ্বংসকারী দের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অবৈধভাবে বালু ,চিনেমাটি উত্তোলন এবং গাছপালা নিধন করা বন্ধ করতে হবে।