ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার ধরন্তি আকাশী বিলের সরকারি বিলমোড়ল গজারিয়া কুড়ি জলমহলটি দখল এবং বে-আইনীভাবে ফিশিং কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মৎস্যজীবীলীগের সাবেক আহবায়ক দূর্গাচরণ দাসের বিরুদ্ধে। দূর্গাচরণ দাস উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ গ্রামের বিপ্রচরণ দাসের ছেলে।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আকাশী বিলের পশ্চিম অংশে বিলমোড়ল গজারিয়া কুড়ি, চান্নিকুড়ি, দুল্লাই, আশা, ছাপন ঠাহরা ও গোদাইরা নামে ৬ টি অংশ জলমহল রয়েছে। এই জলমহল গুলো ২০১৯ সালে ধর্মতীর্থ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক দূর্গাচরণ দাস ইজারা পায়। পরবর্তীতে গলানিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মোঃ নবী হোসেন বাদী হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে ইজারা বাতিল চেয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেন যাহার মামলা নং ৫৫১৯/১৯।
রিটের প্রেক্ষিতে মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ গত ৫ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে এই ইজারা বাতিল করে পূনরায় ইজারা দেওয়ার আদেশ দেন। উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে দূর্গাচরণ দাস মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে লিভ টু আপিল মামলা করেন যাহার মামলা নং ২৮৮০/২২, উক্ত আপিল মামলা বর্তমানে শুনানীর অপেক্ষায় আছে।
এ অবস্থায় স্থানীয়রা জানান, বিলটিতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বে-আইনীভাবে মাছ চাষ কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে দূর্গাচরণ। কারণ বিলের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্ছিত হওয়ার পথে। ধর্মতীর্থ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লোকেরা সরকারকে বায়ে রেখে স্থানীয় মহাজনদের সাথে যোগসাজস করে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিল ফিশিং করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিলমোড়ল গজারিয়া কুড়ি জলমহলের বাকী ৫ টি অংশ অশিদ দাস, রতন দাস, প্রাণ কুমার দাস, হাদিম হোসেন, দুলাল মিয়া, মন্টু মিয়া, নন্দলাল দাস, বাচ্চু মিয়া, হোনারো, হরি সরকার, ইদ্রিছ মিয়া ও বসু দাস এবং রাধাচরণ দাস এই জলমহলে বিস্তৃত হাওর জুড়ে চাটীপাটির বাঁধ দিয়ে এলাকার গরীব নিরিহ মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে নিষেধ বাধা দিয়েছে, তাদেরকে বাঁধ নিমার্ণের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, এই বাঁধ দূর্গাচরণের, আমরা দূর্গাচরণ দাসের কামলা হিসেবে কাজ করছি।
গলানিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবী হোসেনের অভিযোগ, বিলমোড়ল গজারিয়া কুড়ি জলমহলসহ বাকি ৫ টি অংশ দূর্গাচরণ দাস বিভিন্ন লোকের কাছে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সাব ইজারা দিয়ে দিয়েছে।সে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয়ে দাপট দেখিয়ে আমাদের কে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে জলমহল দখলদার দূর্গাচরণ দাস বলেন, ২০২৪ সালের রাজস্ব দিতে মতামতের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত এখনো হাতে আসেনি। রাজস্ব না দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এই বিল আমার দখলে আছে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মেজবাউল আলম ভূইয়া বলেন, আইনি মতামতের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। মতামত আসার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।