গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জেলার শেরপুরের সবকয়টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে কোন কোন নদীর একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে আশপাশের গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শেরপুর জেলাশহরসহ নালিতাবাড়ী,ঝিনাইগাতি উপজেলা ও পৌর শহরে জলাবদ্ধতায় বাসা-বাড়িতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৫৯ মিলিমিটার, পাহাড়ি নদী চেল্লাখালীর পানি ৫২৫ মিলিমিটার ও ভোগাই নদীর দুটি পয়েন্টের পানি ১৭২ মিলিমিটার এবং ৫৬ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে এসব নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ কওে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ঝিনাইগাতি উপজেলা সদর বাজার ও উপজেলা পরিষদ ইতিমধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে। নালিতাবাড়ীর শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, মন্ডলিয়াপাড়া ভজপাড়া ও সন্নাসীভিটায় ভোগাই এবং চেল্লাখালীর বাঁধ ভেঙেছে। নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজিরখামার সড়ক। চেল্লাখালী নদীর তীরবর্তী বাতকুচি এলাকা প্লাবিত হয়ে অনেকে বাড়িতে আটকা পড়েছেন। । নন্নী-আমবাগান সড়ক, নন্নী-মধুটিলা ইকোপার্ক সড়ক, আমবাগান-বাতকুচি সড়ক চেল্লাখালী নদীর পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি।
এছাড়াও জেলার প্রতিটি শহরে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ভারি বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের পানিতে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতির অন্তত ১০টি ইউনিয়নে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। তলিয়ে গেছে শত শত একর জমির উঠতি আমন ফসল,সবজি বাগান এবং মাছের গেড়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে শেরপুরে ১৭৭ মিলিমিটার এবং নালিতাবাড়ীর দুটি পয়েন্টে ২৫৫ ও ২৬০ মিলিমিটার।
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, আটকা পড়াদের উদ্ধারে অংশ নিয়েছেন ঝিনাইগাতি এবং নালিতাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এান সহায়তা অব্যহত রয়েছে।