আমার প্রতিবন্ধী পোলাডা কুনু গেলোগা? কই খোঁজমু? আমি বেডি মানুষ, পোলার বাপও বাক প্রতিবন্ধী; সেওতো কতা কবার পায়না! দুইডা মেয়ে আছে, তাদের বিয়া দিয়া দিছি। মেয়েরা ও তাদের জামাইরা আঙরে খোঁজখবর নেয় ঠিকই, কিন্তু তাগরওতো সংসার আছে। তাদের সংসার ঠিকঠাক কইরা তারপরে সময় পেলেই আঙরে খোঁজখবর ভালাই নেয়। পোলাডা কই গেলোগা? কি যে করি, কই যাই? পাগরা পোলাডার নাইগ্যা তার ফুফা-ফুফুসহ সবাই ইনু ওনু দৌঁড় পারতাছে। চারদিন অইয়া গেলো পোলাডার কোন খবর পাইতাছি না। রাতে কই থাকতাছে, কি খাইতাছে আল্লাহই জানে? আমি অহন কি করমু বুঝতাছিনা! আল্লাহর পরেই মানবদরদী মানুষ ছাড়া অহন আমার কেউ নাই। আইন্নেরা আমার বুকের ধন পাগল পোলাডারে কেউ খোঁইজ্জা পাইলে আমার হতে বুঝাইয়া দেইনযে। এভাবেই মানুষের ধারে ধারে ঘুরে আহাজারী করছেন শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের নাকশি টাকিমারি এলাকার বাকপ্রতিবন্ধী তোতা মিয়ার অসহায় স্ত্রী।
জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের নাকশি টাকিমারি এলাকার বাকপ্রতিবন্ধী তোতা মিয়ার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে আব্দুর রহমান (বয়স ১০+) গত রবিবার (২৮ জুলাই) দুপুরের দিকে সাইকেল নিয়ে বেড় হয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। এর পরে থেকে আব্দুর রহমানের ফুফা-ফুফুসহ সকল আত্মীয় স্বজনরা তাকে সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজছেন। সাইকেল চালিয়ে নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার সময় তার পড়নে খেলার জার্সির ট্রাউজার ছিলো। পরে কে বা কারা তাকে একটি পাঞ্জাবী পড়িয়ে দিয়েছেন।
আব্দুর রহমানের ফুফা মতিউর রহমান মতি জানান, খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সোমবার তারা খবর পান জুগনিমুড়া এলাকায় কোন এক দোকানের বারান্দায় রহমান নাকি রাত কাটিয়েছে। এই খবর পেয়ে তারা ওই এলাকায় গিয়ে জানতে পারেন, সে দুপুরের দিকে ওই এলাকা থেকে সাইকেল চালিয়েই চলে গেছে। এরপরে জুগনিমুড়া এলাকার আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করেও সেদিন তাকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন মঙ্গলবার অজ্ঞাত লোক মারফত জানতে পারেন আব্দুর রহমানের মতো একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে কুড়িকাহুনিয়া এলাকায় বিকেলে অন্যএক মানসিক প্রতিবন্ধীর সাথে খেলা করছে। এই খবর পেয়ে আব্দুর রহমানের ফুফা দ্রæত সেখানে গিয়ে শুনেন সেখান থেকেও সে চলে গেছে! তবে সন্ধান দাতাদের তথ্যমতে উভয় জায়গার লোকজনের সাথে আব্দুর রহমানের ফুফা মতিউর রহমান মতি কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন তারা যাকে খোঁজতেছেন, সে ওই ছেলেটাই।
চারদিন গত হলেও আব্দুর রহমানকে খোঁজে নাপেয়ে হতাশ হয়ে আত্মীয় স্বজনসহ মানুষের ধারে ধারে ঘুরছেন অসহায় মা। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্ধান পেলে ০১৬৪৬-৭৫০ ৬৫৭ (আ. রহমানের ফুফা), ০১৭১২-৩৬৬ ১৭৬ (নকলা প্রেসক্লাব), ০১৭১২-৬৭৪ ৭৪১ (প্রেসক্লাব নালিতাবাড়ী), ০১৭১৮-৫২৮ ৩১০ (নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব) এই নম্বরে জানাতে অথবা নিকটস্থ থানায় পৌঁছে দিতে সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমানের স্বজনরা।
আব্দুর রহমানের মা জানান, তার ছেলেকে কেউ জিগাইলে সহজে কথা বলতে পারেনা। তবে তোমার নামকি আব্দুর রহমান? এমন প্রশ্ন করলে জবাবে হু বলতে পারে। তাছাড়া মাঝে মধ্যে বাবা মায়ের নাম বলতে পারে। এছাড়া অন্যকোন কথা বলতে পারেনা বলে জানিয়েছেন তিনি।