নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অভিযোগের যেন শেষ নেই। ঘন ঘন লোডশেডিং, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায়, ভাঙ্গা মিটার জোড়াতালি দিয়ে চালানো সহ আরো অনেক অভিযোগ। পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ যেন নিত্যদিনের। এ সমস্ত অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের বারবার অবগত করা হলেও তারা কিছুতেই কর্ণপাত করছে না।
চলছে ভাদ্রমাস। প্রচণ্ড তাপদাহ আর তীব্র গরম। অপরদিকে গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে ঘন ঘন লোডশেডিং। সেই সাথে ভৌতিক বিদ্যুৎ বিলের বিড়ম্বনা। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রাম ঘুরে। পল্লী বিদ্যুতের বিভিন্ন গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা গেছে এ সব তথ্য।
উপজেলার শুরাইল, শ্রীঘর, বুড়িশ্বর, ফান্দাউক, রমন্ডল, ভলাকুট, গোয়ালনগর, ভোলাউক, তিলপাড়া, কুন্ডা, হরিপুর, নরহা, পূর্বভাগ, কদমতলী, রামপুর, নোয়াগাঁও সহ বেশ কিছু এলাকার লোকের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের হাফেজ মাওলানা মোতাহার হোসাইন বলেন, আমাদের গ্রামে চব্বিশ ঘন্টার ভিতর তিন ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। আগে আমার প্রতি মাসে আমার বিল আসতো ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আর এখন সেই বিল আসে ২১০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক গ্রামের সাফি মাহমুদ জানান, তাদের গ্রামে কারেন্ট ৩০ মিনিট থাকলে ৯০ মিনিট থাকে না আর বিলের সময় দেখা যায় আগের মাসের চেয়ে অনেক বেশী বিল আসে।
গোয়ালনগর ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের তাবারক হোসাইন বলেন, আমার মিটার প্রথম ভাল ছিল। এখন বিল আসে আগের চেয়ে অনেক বেশী। আগে আসতো ২২০ পড়ে ৪৩০ আর এখন আসে প্রতি মাসে ২১০০ টাকা।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের ভোলাউক গ্রামের প্রাবাসী জামাল হোসেন বলেন, আমার একটা মিটার নষ্ট হয়ে গেছে। অফিসে জানানোর পর বলছে পাল্টিয়ে দেবে। ১৫ দিন পরে ২ তারিখ অভিযোগ করেছে। ৩ তারিখ পুরাতন একটা মিটার লাগিয়ে দিয়েছে। ৭ তারিখে ওই মিটারে দেখা যাচ্ছে ৪ দিনে ৫৭০০ ইউনিট খরচ হয়েছে।
গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শেখ শাহ আলম জানান, গতকাল দুপুর একটার সময় কারেন্ট চলে গিয়ে আসছে রাত ৮টায়। আবার ৯টার সময় গেছে আসছে রাত ১১টায়, এমন করেই আমাদের এলাকায় কারেন্ট যাওয়া আসা করে। বিলও ডাবল আসে।
জনগণের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম জানান, লোডশেডিংয়ের বিষয়টি জাতীয় সমস্যা।
অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, যদি আমাদের কোন লোক অন্যায় বা অবৈধভাবে অতিরিক্ত বিল আদায়ের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।