সারাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে শেরপুর জেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে ১৭ জুলাই বুধবার বিকেল ৩টার থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত জেলা শহরের নিউমার্কেট মোড়, থানা মোড় ও চকবাজারে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, ছাত্রলীগ ও পুলিশসহ দুই ঘণ্টাব্যাপী ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছে।
এসময় আহত শেরপুর পুলিশ লাইন্সের নায়েক শফিক (৩৫), কং মোফাজ্জল হোসেন (৩২), সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম (৪২), সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসিবুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা তাশদীদুর রহমান, মাসুদ রানা ও জসিম, শিক্ষার্থী জান্নাতুল মিম, সুজন, রিয়া, তালহাজ, শরিফসহ বেশ কয়েকজন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী রয়েছেন।
গুরুতর আহত শফিক ও কং মোফাজ্জল হোসেনকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাদের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার বিকেলে শেরপুর সরকারি কলেজ থেকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা “কোট নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক” এমন স্লোগানে একটি মিছিল বের করে। এসময় ছাত্রছাত্রীরা বৈষস্যমূলক কোটা সংস্কার আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে পরে ওই মিছিলিটি শহরের নিউমার্কেট মোড়ে পৌছামাত্র কোটা বিরোধী আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সাথে বিক্ষোভকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে গেলে পুলিশের সাথেও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষের রূপ নেয় এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়। এঘটনায় শহরের প্রধান সড়কটি এক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় শহরের দোকানপাট সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষের মাঝে এক ভিতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ খোরশেদ আলম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আরাফাতুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোড়ে। এতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও একটু পর ফের কোটাবিরোধী ছাত্রছাত্রীরা থানা মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং রাস্তায় আগুন দেয় ছাত্রছাত্রীরা। পরে ফের ছাত্রছাত্রী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনেন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।