শাহিন খন্দকার, মাগুরা।।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল গ্রামের এক কৃষকের তিন শতাধিক পেয়ারা গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (১২জুন) সকালে শ্রীকোল গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন জমিতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি নিয়ে মাগুরা জেলা আদালতে মামলা চলে আসছিলো। জমিটি ভোগদখলে রয়েছে শ্রীপুর উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ রাশেদুল আলম কণা।
ক্ষতিগ্রস্ত পেয়ারা বাগানের মালিক রাশেদুল আলম কনা বলেন, মাগুরার শ্রীপুর সহকারী জজ আদালত দেওয়ানী মামলা নং ২৫৯/১৭ ডিগ্রিপ্রাপ্ত সূত্রে জমিটির মালিক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছি। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি মোতাসিম বিল্লাহ সংগ্রামের পক্ষে নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ায় প্রতিপক্ষ নির্বাচিত চেয়ারম্যান শরিয়ত উল্লাহ হোসেন মিয়ার সমর্থক শিহাব মেম্বার সহ তার লোকজন জন আমাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন । নির্বাচনের পর থেকে তাদের ভয়ে আমি আমার বসতভিটাই বসবাস করতে পারছিনা ।
গত ১০ জুন রাতে গোপনে আমার বাড়িতে গেলে আমাকে মারার ২০-৩০ জন লোক আমার বাড়ি ঘেরাও করে পরে শ্রীপুর থানা কে জানালে শ্রীপুর থানার ওসি আমার বাসায় এসে আমাকে উদ্ধার করেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালে উক্ত প্রতিপক্ষরা আমার উপর হামলা করে মারাত্মকভাবে জখম করে এই ঘটনায় বর্তমান শ্রীখোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ হোসেন কুটি মিয়াসহ কয়েকজনের নামে মামলা করি বর্তমান মামলাটি বিচারাধীন অবস্থায় আছে ।উক্ত মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি হুমকি দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও নির্বাচনের পর থেকে শিহাব মেম্বার ও তার লোকজন আমার কাছে বিভিন্নভাবে চাঁদা চেয়ে আসছে চাঁদা না দিলে আমার পেয়ারা বাগানের সব পেয়ারা গাছ কেটে বলবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় এবং পূর্ব শত্রুতা জেরে ১২ ই জুন মঙ্গলবার সকালে দুর্বৃত্তরা আমার ৫ একর ৯৫ শতাংশ জমির মধ্যে ১ একর জমির ৩ শতাধিক ধরন্ত পেয়ারা গাছ কেটে দিয়েছে ।
তিনি আরোও বলেন, আমার জমিতে আমি অনেকটাকষ্ট করে পেয়ারা লাগিয়ে ছিলাম। পেয়ারা গাছের বয়স ৩ বছর। কিছুদিন হলো আমি পেয়ারা বিক্রি শুরু করেছি। পূর্বের শত্রুতার জের ধরে শত্রুতা করে আমার গাছগুলো কেটে দিয়েছে এবং একটি কুচক্রী মহল জমিটি দখলের পাঁয়তারা করছে। আমি আইনের মাধ্যমে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিহাব মেম্বার বলেন ,গতকাল বাগান মালিকপক্ষের সাথে এই এলাকার কিছু কিশোরদের পেয়ারা খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় তারই জেরে এই পেয়ারা গাছ কর্তন করা হয়েছে । এর সাথে আমি কোনভাবেই জড়িত না। আর কখনো আমি কারো কাছে চাঁদা দাবি করিনি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন,সকালে ৯৯৯ এর একটি ফোনের মাধ্যমে সংবাদ পাই। ঘটনাস্থলে এসে দেখা যায় কনা নামক এক ব্যক্তির বাগান থেকে দুষ্কৃতিকারীরা আনুমানিক ৩০০ টি পেয়ারা গাছ কেটে নিয়ে গেছে। পেয়ারা বাগানের মালিক যদি থানাতে অভিযোগ দেয় অবশ্যই অভিযোগটি আমলে নেয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, একাধিক পেয়ারা গাছ কর্তন হয়েছে। এখানের জমিতে খাস খতিয়ানের অংশ রয়েছে। আগামীকাল উভয়কে প্রয়োজনীয় জমির কাগজ নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।