পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ও তত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, সমাজ রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে যে বৈষম্য রয়েছে-তা দূর করতে জুলাই বিপ্লবের নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এ সম্ভাবনা ব্যর্থ হলে ইতিহাসের দায় এড়ানো সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সমাজ রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করতে হলে মেধা ও যোগ্যতা বিকাশের সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সবাইকে যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। সমাজ রাষ্ট্রে বেকারত্বকে অন্যতম বৈষম্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বৈষম্য অনেক পরিবারের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। উন্নত দেশে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হলেও বাংলাদেশে এই শিক্ষার প্রতি বিশেষ ধরনের সামাজিক নেতিবাচকতা রয়েছে। এই নেতিবাচকতা দূর করাঅন্যতম চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ছোট ছোট আবিষ্কারে ভর করে বাংলাদেশ এগিয়েছে। যেখানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রায়েছে। অথচ, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার ক্ষেত্রে বেকারত্ব, শূন্য পদ ও নিয়োগ বন্ধের মতো অদ্ভুত ত্রিভুজ চেপে আছে। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে হলে এই অদ্ভুত ত্রিভুজ ভাঙ্গতে হবে। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ডেস্ক ও ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর গুরুত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। তবে মাঠ পর্যায়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা অগ্রণী ভ‚মিকা রাখছেন। তা সত্বেও প্রকৌশল ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির বৈষম্য রয়েছে। এটা উত্তরণের জন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিজস্ব শক্তির জাগরণ ঘটাতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আইডিইবি’র ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে “বৈষম্যমুক্ত কর্মক্ষেত্র-সময়ের দাবি” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. রহমান এসব কথা বলেন।
১৪ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌ. মোঃ কবীর হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিইবি’র সদস্য সচিব প্রকৌ. কাজী সাখাওয়াত হোসেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সমাজ রাষ্ট্রে বৈষম্য বিকাশের বিভিন্ন কারণ ও প্রতিকার তুলে ধরেন। আলোচক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কার না হলে বৈষম্য দূর হবে না। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর যেখানে বৈষম্য রয়েছে, সেখানে আঘাত করতে হবে। অধ্যাপক হাসান মুহাম্মদ সাদেক বলেন, বৈষম্য সমাজ-রাষ্ট্রে সকল অনাসৃষ্টির জন্য দায়ী। যে সকল দেশ বিশ্বে উন্নত হয়েছে তারা প্রথমে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করেছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকলে তা দক্ষদের মনোবল ভেঙ্গে দেয় ও দুর্নীতিকে উস্কে দেয়।