পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট শেরপুর জেলায় ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেছেন পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর ভাইস চেয়ারম্যান ও দৈনিক আমাদের দিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির)। আজ (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে শেরপুর জেলার জুলগাঁও উন্নয়ন সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শাকিলের কাছে তিনি এই চেক হস্তান্তর করেন।
এসময় তিনি বলেন, গত দু’দিন যাবত শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এই দুর্যোগে প্রায় তিন লক্ষ নাগরিক চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ। পর্যাপ্ত নৌকা এবং খাদ্য সামগ্রী না থাকায় আটকে পড়ে আছে হাজারো মানুষ। এ পর্যন্ত বন্যায় ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
শেরপুর জেলার বন্যার্তদের পাশে সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা সামান্য কিছু থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সাধ্যমত সাহায্য নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
চেক প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন উত্তরণ পাবলিক স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ, এম জে ফ্যাশনের হেড অব সেলস মেহেদী হাসান খান, ঝিনাইগাতীর খালিদ রহমান খুশবুসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের পানি কিছুটা নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের অন্তত দেড়শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) আকস্মিক এ বন্যায় বৃদ্ধ ও নারীসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। তিন উপজেলায় এখনো অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ।
ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর মহারশি ও ভোগাই নদীর অন্তত ১০ জায়গায় বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে প্লাবিত গ্রামের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও আবাদ তলিয়ে গেছে। জেলার অন্তত ২০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত বেশ কিছু এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।