বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
পাঠ্যপুস্তকে দেশের সামাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন থাকবে: এনসিটিবি চেয়ারম্যান ভালুকায় পাবলিক লাইব্রেরি পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান বিদেশে থেকেও চাকুরীতে বহাল তবিয়তে সাবেক এমপি একরাম চৌধুরীকে কারাগারে প্রেরণ ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত খর্ণিয়ায় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত মডেল আবাসন নির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ পুষ্পধারা নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টার সাথে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সাক্ষাৎ বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে শেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মানববন্ধন সালাউদ্দীন ও গালিবের নেতৃত্বে ইবির ফটোগ্রাফিক সোসাইটি

স্বাক্ষর জাল করে অধ্যক্ষের টাকা উত্তোলন

আবু সায়েম মোহাম্মদ সা'-আদাত উল করীম / ৪৮ বার
আপডেট সময় :: রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:৩৪ অপরাহ্ন

জামালপুরের বকশীগঞ্জের খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জুলাই মাসে সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষর জাল করে কলেজের টিউশন ফি’র এক লাখ ৯১ হাজার টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মো. আবুল কালাম আজাদ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং ২০১৮ সালের আগেও তিনি কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপর ২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হন নিহারুন নাহার বিলকিস। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের পতন ঘটে ৫ আগস্ট। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ায় নির্ধারিত মেয়াদের আগেই সভাপতির দায়িত্ব ছাড়তে হয় নিহারুন নাহার বিলকিসকে। বর্তমানে তার স্থলে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব পেয়েছেন বকশীগগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অহনা জিন্নাত।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার কলেজের বিভিন্ন তহবিলের টাকা একাই লেনদেন করার জন্য বকশীগঞ্জ ও পাশের শেরপুর জেলায় কলেজটির নামে একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলেছেন। শেরপুর শাখা অগ্রণী ব্যাংকে কলেজের একটি ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। কলেজ পরিচালনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছচারিতা ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠায় একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলে একক কর্র্তৃত্বের মাধ্যমের কলেজের বিভিন্ন তহবিলের টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের সন্দেহেও বাড়ছে। কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে অধ্যক্ষ তার জবাব দাখিল করেন। এরপর তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মো. আবুল কালাম আজাদ ২০১৭ সালে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন কৃষি ব্যাংক বকশীগঞ্জ শাখা থেকে অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার ও রেজাউল করিমের স্বাক্ষরে সর্বশেষ চার হাজার পাঁচশত টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার পাশ্ববর্তী শেরপুর জেলা সদরের অগ্রণী ব্যাংক শেরপুর শাখায় অনুসন্ধানে গিয়ে কলেজটির সাবেক সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষর ব্যবহার করে কলেজের টিউশন ফি’র টাকা উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ব্যাংকটির শাখার ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চলতি বছরের ১৪ জুলাই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ বজলুল করিম তালুকদারের যৌথ স্বাক্ষরে এক লাখ ৯১ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। যেহেতু টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কলেজ থেকে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কোনো সভার রেজুলেশন দেওয়া হয়নি, তাই পূর্বের রেজুলেশন মোতাবেক টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক। টাকা উত্তোলনের চেকের পাতায় সাবেক সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষর জাল কিনা, এ প্রসঙ্গে ব্যাংক ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র কর্মকার বলেন, আবুল কালাম আজাদের প্রকৃত স্বাক্ষরের সাথে কিছুটা গড়মিল পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখে স্বাক্ষরটি জাল কিনা তা নিশ্চিত না হয়ে বলা যাচ্ছে না।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার টাকা উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জিন্নাত বলেন, শেরপুরের অগ্রণী ব্যাংকে কলেজের হিসাব থেকে সাবেক সভাপতির স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানেন না বলে জানান।

দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ তার স্বাক্ষর ব্যবহার করে শেরপুরের অগ্রণী ব্যাংক থেকে কলেজের টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। জুলাই মাসে উত্তোলন করা হয়েছে কিনা সেটাও জানি না। তবে অগ্রণী ব্যাংকের ওই চেকে আমার স্বাক্ষরটা দেখাবেন, সেটা জাল কিনা তাহলে বলতে পারবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!