শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
টেকসই উন্নয়ন অর্জনে দেশের ব্র্যান্ডগুলোকে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো সাসটেইনাবিলিটি সামিট ২০২৪ ঘুস, দুর্নীতি বন্ধের মাধ্যমে কারাগারের বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান সম্ভব : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিকদের জন্য শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেরপুরে ক্রয়কৃত জমিতে ধান রোপণে বাঁধা, হামলায় আহত ২ তাহলে কমলাই পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট! এবার সরকারের কাছে ৬৩ কোটি ডলার সুদ চাইল রাশিয়া নোয়াখালীতে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে সাবস্টেশনে ছাত্রদের হামলা সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ, ২৭৯ সিমকার্ড ও ৭৬ মোবাইলসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক টেলিটকের সেবার মান উন্নত করার নির্দেশ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের গ্রাম বাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর এলজিইডি : স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

জিয়াউল আহসান রিমান্ডে যার নাম বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১১ বার
আপডেট সময় :: রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট এলাকায় হকার শাহজাহান হত্যা মামলায় সেনাবাহিনীর বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান গ্রেফতার হয়েছেন। হকার শাহজাহান হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, গুম ও অসংখ্য ব্যক্তির ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ। এসব বিষয়েই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।

আট দিনের রিমান্ডে থাকা অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গোয়েন্দা দফতরে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

রিমান্ডে থাকা জিয়াউল আহসান গোয়েন্দাদের জেরার মুখে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম বলেছেন। তিনি বলেছেন, তার কাছে সব ধরনের নির্দেশ আসত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের কাছ থেকে।

প্রায় ১৫ বছর ধরে আলোচিত-সমালোচিত জিয়াউল আহসান ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর একজন প্রশিক্ষিত কমান্ডো ও প্যারাট্রুপার ছিলেন। এছাড়া দীর্ঘদিন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‌্যাব) দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ৫ মার্চ তিনি উপঅধিনায়ক হিসেবে র‌্যাবে যোগ দেন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ২০২২ সাল থেকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভিন্নমত এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল দমন করার জন্য গুমের মতো জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ পর্যন্ত গুমের ঘটনা ঘটে।

জিয়াউল আহসান গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, এসব গুম ও গুপ্ত খুনের সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক।

সূত্র জানান, এনটিএমসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হলেও এটির নিয়ন্ত্রণ ছিল তারিক সিদ্দিকের হাতে। তার ইশারায় চলত এনটিএমসির কার্যক্রম।

সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জিয়াউল আহসানকে র‌্যাবের উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও তারিক সিদ্দিক এবং জিয়াউল আহসান কর্তৃক গুম-খুনের অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকৃতপক্ষে দেশে গুম ও গুপ্ত হত্যাগুলো মূল নিয়ন্ত্রক হলেন শেখ হাসিনার আত্মীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অসংখ্য ব্যক্তিকে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। মূলত ব্যাপক পরিসরে গুমের ঘটনা শুরু হয় তার হাত ধরে।

সেটি শুরু হয়েছিল ১/১১-এর পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর। ঐ সময় আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী, বিরোধী ঘরানার রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সরকারবিরোধী সমালোচকসহ অসংখ্য ব্যক্তি গুমের শিকার হন। তখন দেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রায়ই বিভিন্ন ব্যক্তি গুম হয়েছেন বলে খবর ছাপা হতো।

ভুক্তভোগীর পরিবারগুলো থানা থেকে শুরু করে ডিবি, র‌্যাব কার্যালয়ে ধরনা দিয়েও নিখোঁজ স্বজনের খোঁজ পেত না। এসব বিষয়ে জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সাফ জানান- এসব ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন তারিক সিদ্দিক।

সূত্র জানায়, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল ২০২২ সাল থেকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এনটিএমসির দায়িত্বে থাকাকালীন একের পর এক কল রেকর্ড ফাঁস করেন তিনি। রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য হুমকি এমন সব ব্যক্তির স্পর্শকাতর কল রেকর্ড তার নির্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়া হতো। তিনি এমটিএমসির দায়িত্বে থাকাকালীন সরকারের এই সংস্থাটির আড়িপাতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। এই সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তার নির্দেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মোবাইল ফোনে আড়িপাতা হতো। এর পর ঐ সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কল রেকর্ড সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হতো। এসব কল রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে অনেক সুশীল সমাজের লোকজনকে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হতো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!