নিজস্ব প্রতিবেদক
জামালপুরের বকশীগঞ্জে নিজ কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এই ঘটনা ঘটে । নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দলিল লেখক ও জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে দলিল লেখকরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দলিল লেখকরা জানান, গত বছরের ১৫ অক্টোরব বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। এর আগে তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগতি সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে আসছেন। কথায় কথায় তিনি দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। সকালের দলিল তিনি রাতে পাস করেন। মনগড়াভাবে চালাচ্ছিলেন সরকারি অফিস। সব দলিল লেখকরা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। দিন দিন তার হয়রানি বেড়েই চলছিল ।
তবে দলিল লেখকদের সব অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-রেজিস্ট্রার বলেন, দলিল লেখকদের অনৈতিক আবদার না মানার কারণেই তারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এই ঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
দলিল লেখকরা জানান, গত বছরের ১৫ অক্টোরব বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম। এর আগে তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগতি সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে আসছেন। কথায় কথায় তিনি দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। সকালের দলিল তিনি রাতে পাস করেন। মনগড়াভাবে চালাচ্ছিলেন সরকারি অফিস। সব দলিল লেখকরা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। দিন দিন তার হয়রানি বেড়েই চলছিল।
বুধবার রেহেনা বেগম নামে এক নারী তারই সহোদর বোন রুবিনা আক্তারকে ৫৮ শতাংশ জমি হেবা মুলে দলিল করে দিতে যান। ওই দলিল নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের কামরায় যান দলিল লেখক শহিদুল্লাহ। এ সময় সাব-রেজিস্ট্রার জমিদাতার কাছে জানতে চান, কেন তিনি তার বোনকে হেবা মূলে জমির দলিল করে দিচ্ছেন। কত টাকা নিয়েছেন।
বগারচর এলাকার আল আমিন বলেন, ঢাকার কর্মস্থল থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলেন তিনি। ব্যাংক চালানসহ সকল কাজই সম্পন্ন করেন। হঠাৎ করেই সাবরেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের দ্বন্দ্বে তিনি আর দলিলটি করতে পারেননি। পুনরায় আবার ছুটি নিয়ে তাকে আসতে হবে বলে হতাশা প্রকাশ করেন।
বকশীগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী আহসান খোকা বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার কাউকে মানুষ মনে করেন না। অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিণত করেছেন। কথায় কথায় দলিল লেখকদের সনদ বাতিলের হুমকি দেন। বুধবার বৈধ এক দলিল না করে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি একাধিক দলিল লেখকের সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং আমিসহ দুইজনকে বরখাস্ত করেন। আমরা দলিল লেখকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তার অপসারণের দাবিতে।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া বলেন, বকশীগঞ্জের কোনো দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রারকে এই অফিসে দেখতে চায় না। তার আচরণে সবাই অতিষ্ঠ। কোনো কারণ ছাড়াই দলিল লেখকসহ জমির দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। মনগড়াভাবেই চলছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। আমরা তার অপসারণ চাই।
এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মুহাম্মদ তামীম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু দলিল লেখক তার কাছ থেকে অনৈতিক আবদার করে আসছিলেন। তাদের কথামত কাজ না করায় তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কাউকে বরখাস্ত করার সুযোগ আমার নেই, তাদের শোকজ করেছি মাত্র। তারা সরকারি সম্পদ নষ্টের চেষ্টা এবং কিছু বিনষ্ট করেছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেছে। দলিল লেখকরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনায় তিনি মামলা করবেন বলে জানান।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান, এ বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।