নিজস্ব প্রতিবেদক
গত দুই বছর ধরে ট্রেনের শতভাগ টিকেট অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। গতবার অনলাইনে কিছুটা জ্যাম, হ্যাকিং থাকা, টিকেট বুকিং কালো বাজারির অভিযোগ থাকলেও এবারে তেমন অভিযোগ নেই। এবার ১টি টিকেটের বিপরীতে প্রায় ১ লাখ মানুষ অনলাইনে হিট করেন। সে হিসেবে প্রতিদিন ৩৫ হাজার টিকেটের জন্য এক কোটি হিটও হয় কোনো কোনো দিন। চাহিদা বহুগুণ থাকায় যাত্রীরা প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকেট পাননি।
ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. শাহ আলম কিরণ শিশির ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, এবারে অত্যন্ত সতর্কতার মধ্য দিয়ে ঈদ অগ্রিম টিকেট বিক্রি শেষ হয়েছে, কোনোরকম অভিযোগ নেই কালবাজারির। তবে টিকেট স্বল্পতার কারণে সবাইকে টিকেট দেয়া সম্ভব হয়নি। আজ ৩ এপ্রিল থেকে যাত্রীরা যাত্রা শুরু করবেন।
রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী জানান, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের নির্বিঘেœ গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেলওয়ের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ১৬ জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেনসহ শতাধিক অতিরিক্ত কোচ প্রস্তুত রয়েছে। চলমান ট্রেনের সঙ্গে ঈদযাত্রায় ঈদ স্পেশাল ট্রেন ও কোচ চালানো হবে। তিনি বলেন, বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ দণ্ডনীয় অপরাধ। স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা অবস্থান করবেন। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে শুধু যাত্রার দিন নির্ধারিত ট্রেনে ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকেট বিক্রি হবে। আসনবিহীন টিকেট কাটা যাত্রীরা এসি চেয়ার এবং কেবিন কোচে কোনো অবস্থাতেই চড়তে পারবে না।
স্টেশন ম্যাসেজার মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে ৪২টি, ৭ এপ্রিল থেকে ঈদ স্পেশাল আরো ৮ জোড়া ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটবে প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী নিয়ে। আর সারা দেশে ১২৫টি আন্তঃনগর ট্রেনে দেড় থেকে দুই লাখ যাত্রী ট্রেনে করে গন্তব্যে যাত্রা করবেন। প্রথম দিকে একটু কম ভিড় থাকবে। তবে স্টেশনগুলোতে বাঁশের ব্যারিকেট দিয়ে তিন স্তরের চেকিংয়ের মধ্য দিয়ে যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে হবে। বিনা টিকেটের কোনো যাত্রী ঢুকতে পারবে না। ট্রেনের ছাদে কোনো যাত্রী যাতে না উঠতে পারে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, পশ্চিমাঞ্চলের একটা বড় সমস্যা বঙ্গবন্ধু রেলসেতু বা যমুনা সেতু। এখানে ১০ মিনিটের পথ পার হতে ৪৫ মিনিট লাগে। ট্রেনগুলোকে দুই পারে একের পর এক স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। সে কারণে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো শিডিউল বিপর্যয় হতে পারে। তবে আমরা বিভিন্ন স্থানে মনিটরিং টিম রাখব, যাতে বিভিন্ন পদ্ধতি এপ্লাই করে শিডিউল ঠিক রেখে ট্রেন চালাতে পারি।